রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬

First Blood Donation Call Center In Bangladesh (DonateBloodBD.com Call Center)

বিঃদ্রঃ এই পোষ্টে একটি ভিডিও আছে। যদি ভিডিও দেখা না যায় তাহলে আপনার কম্পিউটারে Adobe flash player ইনস্টল (সেটাপ) করুন । গুগুলে যেয়ে Adobe flash player লিখে সার্চ করে ডাউনলোড করে ইনস্টল করুন।

শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৬

রক্তদানের উপকারিতা

রক্তদানের উপকারিতা



বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৪ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। এবং এই রক্তের একটা বড় অংশই আসে পেশাদার রক্ত বিক্রেতার কাছ থেকে। পেশাদার বিক্রেতাদের মাঝে একটা বড় অংশ আছে যারা কিনা বিভিন্ন রকম নেশায় কিংবা রগে আক্রান্ত। অনেক সময়েই নিরুপায় হয়ে এই দূষিত রক্ত গ্রহণ করে জটিল রোগে আক্রান্ত হন অনেক মানুষ, মৃত্যুবরণও করে থাকেন।তাই আপনি যদি নীরোগ ও সুস্থ হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপন বা পরিচিত জনদের প্রয়োজনের সময় রক্তদানে এগিয়ে আসতে পারেন। আবার আনেকেই মনে করে থাকেন রক্ত দানে শারিরিক কোন সমস্যা হতে পারে। কিন্তু জেনে নেওয়া ভালো যে রক্ত দানে কোন শারিরিক সমস্যা হয় না।
রক্তদানের উপকারিতা:
- রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কেননা রক্তদান করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার শরীরের মধ্যে অবস্থিত বোন ম্যারো নতুন কণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়। রক্তদানের ২ সপ্তাহের মধ্যে নতুন রক্তকণিকা জন্ম হয়ে ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। নিয়মিত রক্ত দান করলে অস্থিমজ্জা থেকে নতুন কণিকা তৈরির চাপ থাকে, ফলে অস্থিমজ্জা সক্রিয় থাকে। এতে যেকোনো দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে হঠাৎ রক্তস্খলন হলেও শরীর খুব সহজেই তা পূরণ করতে পারে।
নিয়মিত রক্তদানে দেহে মাত্রাতিরিক্ত আয়রন বা লৌহ সঞ্চয় প্রতিরোধ করে।
- নিয়মিত রক্তদানকারীর হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কম
- রক্তদানের সময় রক্তে নানা জীবাণুর উপস্থিতি আছে কি না, তার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ফলে দাতা জানতে পারেন, তিনি কোনো সংক্রামক রোগে ভুগছেন কি না। নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে বিনা খরচে জানা যায় নিজের শরীরে বড় কোনো রোগ আছে কিনা।
- অনেক সময় রক্তদাতার শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
- সম্প্রতি ইংল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত রক্তদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
- রক্তে কোলেসটোরলের উপস্থিতি কমাতে সাহায্য করে নিয়মিত রক্তদান।
- স্থূল দেহী মানুষদের ক্ষেত্রেও রক্তদান অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে ওজন কমাতে।
- সাধারণত যে সংস্থার কাছে রক্ত দেওয়া হয় তারা একটি ‘ডোনার কার্ড’ তৈরি করে দেয়। এই কার্ডের মাধ্যমে একবার রক্ত দিয়েই রক্তদাতা আজীবন নিজের প্রয়োজনে ওই সংস্থা থেকে রক্ত পেতে পারেন।
- মুমূর্ষু মানুষকে রক্তদান করে আপনি পাবেন মানসিক তৃপ্তি। রক্তদান একটি মহাকাজ, যা দাতাকে মানুষ হিসেবে বড় করে তোলে। রক্তদাতার বড় পাওনা—অসহায় বিপন্ন মানুষের জীবন বাঁচানো।
- মানবিক, সামাজিক ও ধর্মীয়—সব দৃষ্টিকোণ থেকেই দাতা অনাবিল আনন্দ অনুভব করেন; সামাজিকভাবেও বিশেষ মর্যাদা পান। গ্রহীতা আর তাঁর পরিবার চিরদিন ঋণী থাকে, তার জীবন বাঁচানোর জন্য। দাতার জন্য তা যে কী আনন্দের, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
- রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকে অত্যন্ত পুণ্যের বা সওয়াবের কাজ। ‘একজন মানুষের জীবন রক্ষা করা সমগ্র মানবজাতির জীবন রক্ষা করার মতো মহান কাজ’-সূরা মায়েদা : ৩২। রক্তদানে অনেক উপকারিতা আছে, কিন্তু সেসব নিয়ত না করে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত করলে আল্লাহর কাছে দুনিয়া-আখেরাতে যে পুরষ্কার পাওয়া যাবে তা-ই সর্বোত্তম। ইসলামী সংগঠন রক্তদানের মাধ্যমে সম্পর্ক বৃদ্ধি করে দাওয়াত দানের ক্ষেত্র তৈরী করতে পারে। ইসলামী সংগঠন সমাজের দ্বীনদার মানুষ, আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে সংগঠিতভাবে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: রক্তদান কোন কঠিন বা দুঃসাহসের কাজ নয় । ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী যে কোন সুস্থ , নীরোগ মানুষ ( পুরুষের ক্ষেএে ওজন কমপক্ষে ৪৮ কেজি , মেয়েদের ক্ষেএে ওজন কমপক্ষে ৪৫ কেজি ) । প্রতি চার মাস পরপর এক ব্যাগ রক্ত দিতে পারেন । এতে আপনার শারীরিক ক্ষতির কোন সম্ভব না নাই ।রক্ত দানের জন্য সাধারণ খাওয়া-দাওয়ায় যথেষ্ঠ । তবে রক্তদানের আগে ও পরে একটু বেশী পরিমানে পানি পান করবেন । রক্তদানের পর কিছু সময় বিশ্রাম নিবেন । এরপর দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজ করতে কোন বাধা নাই ।একজন মানুষের শরীরে থাকে সাড়ে ৫ থেকে ৬ লিটার রক্ত । এক ব্যাগ রক্ত দান করা মানে ৩৫০ থেকে ৪৫০ মিলিলিটার রক্ত দান করা । রক্তরস বা প্লাজমার অভাব পূরণ হয়ে যায় বেশী পরিমান পানি পানের মাধ্যমেই । লোহিত কণিকা ১২০ দিন পরপর প্রতিস্থাপিত হয় । অথাৎ আপনি রক্ত দিন বা না দিন,১২০ পর সেটি মরে যাই এবং নতুন লোহিত কনিকা জন্ম নেয় । বিশুদ্ধ রক্ত পাওয়ার আশায় আমাদের দেশের মানুষ সন্ধানী , রেড কিসেন্ট , অরকা, বাধন, কোয়ান্টাম প্রভূতি সংগঠনের দ্বারস্থ হয় । এসব সংগঠন কিন্তু রক্ত তৈরী করে না । স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের দান করা রক্ত সরবরাহ করার মাধ্যম হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান । মানুষ যত বেশী রক্ত দিবে , এসব সংগঠন তত বেশী বিশুদ্ধ রক্ত সরবরাহ করতে পারবে । তাই স্বেচ্ছায় রক্ত দানে এগিয়ে আসুন । আপনার রক্তে বেচে থাকুক একটি সম্ভবনাময় প্রাণ ।।।
 

সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০১৬

জরুরী রক্তের প্রয়োজনে কিছু ওয়েবসাইট, মোবাইল ফোন সার্ভিস, কিছু প্রতিষ্ঠানের ফোন নাম্বার

জরুরী রক্তের প্রয়োজনে কিছু ওয়েবসাইট, মোবাইল ফোন সার্ভিস, কিছু প্রতিষ্ঠানের ফোন নাম্বার এবং কিছু প্রতিষ্ঠানের বিবরণ  
সংকলনে: শাহাদাতুর রহমান সোহেল

http://www.donatebloodbd.com
http://call4blood.org
http://www.policebloodbank.gov.bd
http://blood.qm.org.bd
http://quantummethod.org.bd/blood-donation



মোবাইল ফোন সার্ভিস

রক্তের বিষয়ে বাংলালিংকের নিজস্ব সার্ভিস রয়েছে। যেকোন বাংলালিংক নাম্বার থেকে ৮০০৮ নাম্বারে ডায়াল করে নিকটস্থ ব্লাডব্যাংক, হাসাপাতাল এবং ডোনারের ইনফরমেশন পাওয়া যায়।


রক্তের প্রয়োজন হলে ফোন করুন:
নাম
যোগাযোগ
সন্ধানী ব্লাড ব্যাংক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ৮৬২১৬৫৮
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা ৯৬৬৮৬৯০, ৮৬১৬৭৪৪, ০১৮১৯-২৮৪৮৭৮
ঢাকা ডেন্টাল কলেজ শাখা ৯০১১৮৮৭, ৮০১৭১৪৬, ৯০০২০৩৫
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ শাখা ৯১২৪৬১৯, ৯১১৮২০২; এক্স: ৪৩০
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখা ৭৩১৯১২৩, ৯৬৬৮৬৯০, ০১৮১৯-২৮৪৮৭৮
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা ০৯১-৫৪৮২৯
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শাখা ০৩১-৬১৬৬২৫
চট্টগ্রাম শাখা ৬১৬৬২৫
রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ৫২১৬৫১৮০
বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ৬৪৪-৫১০০২৯৫
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ০৫৩১-৪৭৪৮
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা ০৭২১-৫২১৬৫১৮০, ০১৭২১-৭৭৩০৮০
খুলনা মেডিকেল কলেজ শাখা ০৪১-৭৬১৫০৯
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ০৮২১-৭১০৮৮০
বাঁধন ব্লাড ব্যাংক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি শাখা ৮৬২৯০৪২, ০১৭১১-০২৫৮৭৬
বুয়েট শাখা ০১৯১২-০৮২৯১৯
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ০১৭১২-১৮০২৪৬
   
রেটিনা ব্লাড ব্যাংক ৯৬৬৩৮৫৩, ০১৬১৪-৬০৬৪১১
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ৯১১৬৫৬৩, ৮১২১৪৯৭
সন্ধানী ইন্টারন্যাশনাল আই ব্যাংক ৯১২৪৩৫৩, ০১১৯০-১৫১৪৮০
স্যার সলিমুল্লাহ কলেজ ব্লাড ব্যাংক ৭৩১৯১২৩
ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংক ৮৩১৭০৯০, ৮৩২১৪৯৫
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ৯৩৫১৯৬৯, ৮৩২২৯৮৭, ৯৩৪১৪৪১, ৮৩১৯৩৭৭
সন্ধানী ন্যাশনাল আই ডোনেশন সোসাইটি ৮৬১৪০৪০
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ৬১৬৮৯১-৯৪, ৯৪৬১৬১৯৯
ফাতেমা বেগম রেড ক্রিসেন্ট ব্লাড সেন্টার, চট্টগ্রাম ০৩১-৬২০৬৮৫, ৬১২৩৯৫, ৬২০৯২৬
পোর্ট হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ৫০২০২৪
রেলওয়ে হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ৭২০১২১-৩৯
বেগম তোয়েবা মজুমদার রেড ক্রিসেন্ট ব্লাড সেন্টার, দিনাজপুর ০৫৩১-৬৪০২১
ব্লাড ব্যাংক, খুলনা ৭৬২০০৬

বাঁধন ব্লাড ব্যাংক



১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি,এস,সি’তে সর্ব প্রথম বাঁধন ব্লাড ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পুরো নাম বাঁধন বা লায়াস বাংলাদেশ।


 
ঠিকানা
বাঁধন, টি.এস.সি (নিচতলা),
(জোনাল অফিস), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ফোন- ০২-৮৬২৯০৪২ ( সকাল ৬ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত)।
ই-মেইল- du@badhan.org
ওয়েব সাইট- www.badhan.org
 
কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি.এস.সি চত্বরে অবস্থিত  এটি একটি স্বায়ত্বশাসিত ও স্বেচ্ছাসেবী রক্তদান কেন্দ্র।
 
শাখা
এর সর্বমোট শাখা রয়েছে ৩২ টি। বাঁধনের শাখাগুলোর মধ্যে ১০ টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২২ টি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পর্যায়ে।
 
রক্ত সংগ্রহের উ
এখানে রক্তের উৎস কেবলমাত্র স্বেচ্ছাসেবীদের দানকৃত রক্ত।
 
রক্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া
রক্ত সংগ্রহ করার জন্য টি.এস.সি চত্বরে বাঁধনের জোনাল অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
 
রক্তদান প্রক্রিয়া
রক্ত দান করতে হলে প্রথমে তাদের ফরম পূরণ করতে হবে। যদি পরীক্ষায় রক্ত ভাল বলে প্রমানিত হয়, তাহলে তারা রক্ত নিয়ে থাকে। রক্ত সংগ্রহ করতে হলে মেডিক্যাল অফিসারের সিল ও স্বাক্ষর যুক্ত লিখিত ব্লাড রিকুইজিশন আনতে হবে। তবেই রক্ত গ্রহণ করা যাবে।
 
রক্ত সংগ্রহ প্রক্রিয়া
ক) সেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী আয়োজনে বাঁধন তাদের দল নিয়ে সহযোগিতা করার চেষ্টা করে।
খ) রক্ত দানের পর রক্ত দাতাদের জন্য গ্লুকোজের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
গ) রক্ত সংগ্রহে সাধারণত সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয়। একটি সিরিঞ্জ একবার ব্যবহার করা হলে তা পুনরায় ব্যবহার করা হয় না।
ঘ) এখানে রক্ত সংরক্ষন প্রক্রিয়া ও প্রযুক্তি প্রচলিত নিয়মে করা হয়ে থাকে। রক্ত সংরক্ষনের জন্য CPDA-1 (ব্যাগ উন্নত মানের) ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
 
রক্ত সরবরাহ
এখানে সাধারণ মানুষ এবং গরীব-অসহায় মানুষের জন্য রক্ত সরবরাহ করা হয়। রক্ত সরবরাহকালে কেবলমাত্র রক্তের ব্যাগের দাম নেয়া হয়ে থাকে।
 
সদস্যপদ
বাঁধনে সেচ্ছাসেবকপদ বা সদস্যপদ পেতে হলে বাঁধনের নির্ধারিত ফরম পূরন করে সদস্য হতে হবে। বাঁধনের সদস্য হতে প্রার্থীকে অবশ্যই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী হতে হবে।
 
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য
ক) এখানে সব ধরনের রক্তের গ্রুপের রক্ত পাওয়া যায়।
খ) এখানে প্রক্রিয়াকৃত কোন রক্ত পাওয়া যায় না। এখানে দাতাদের দেওয়া তাজা রক্ত পাওয়া যায়।
গ) বাঁধন সংগঠনটি সম্পূর্ন সরকার অনুমোদিত একটি প্রতিষ্ঠান।
ঘ) চাহিদামত রক্ত পাওয়া না গেলে বাঁধন অন্যান্য রক্ত সংগঠনগুলোর শরণাপন্ন হয়ে রক্ত গ্রহীতাদের যথাসম্ভব সাহায্য করে থাকে।
 
বিশেষ সুবিধা
এখানে থেলাসেমিয়া রোগীদের জন্য কোন ছাড় দেওয়া হয় না। সাধারণ মানুষ ও গরীব অসহায়দের জন্য যথাসম্ভব ছাড় দেওয়া হয়ে থাকে।
এখানে নামমাত্র মূল্যে রক্ত পাওয়া যায়। রক্ত গ্রহীতাদের শুধুমাত্র রক্ত রাখার জন্য যে ব্যাগ সেই ব্যাগের বিল দিতে হয়। বিল পরিশোধের জন্য তাদের ফর্মের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করতে হয়।
 
খোলা-বন্ধের সময়সূচী
বাঁধন সন্ধ্যা ৬ টায় খোলা হয় এবং রাত ৯ টায় বন্ধ করা হয়। কারও যদি তৎক্ষনাৎ রক্তের প্রয়োজন হয় তাহলে হলগুলোতে যোগাযোগ করতে হবে।
 
গাড়ি পার্কিং
এখানে টি.এস.সি চত্বরে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে।

কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টার

একজন মানুষের রক্ত দিয়ে অন্য একজন মানুষকে মৃত্যুর মূখ থেকে ফিরিয়ে আনার ধারনাটা খুব বেশি দিনের পুরনো নয়। আধুনিক যুগের পূর্বে এরকম ধারনা অবিশ্বাস্য ও উদ্ভট হলেও আধুনিক যুগে বিজ্ঞানের কল্যানে এই অবিশ্বাস্য ধারনাটি সত্য। সমগ্রুপের রক্তের এক মানুষের রক্তে অন্য মানুষ প্রান ফিরে পাচ্ছে। ফলে সৃষ্ট হয়েছে ব্লাড ব্যাংক এবং চালু হয়েছে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসুচি। বাংলাদেশের রক্তদান সংশ্লিষ্ট স্বেচছাসেবী সংগঠনগুলোর পথ ধরেই কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টার ১৯৯৬ সালে স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম চালু করে। রক্ত সংগ্রহের জন্য কোয়ান্টাম একটি আস্থাশীল ব্লাড সেন্টার।
 
কর্তৃপক্ষ
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের আওতায় কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টার পরিচালিত হয়।
 
প্রধান কার্যালয়
৩১/ভি, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সড়ক, (পুরাতন শান্তিনগর), ঢাকা - ১২১৭। (ইস্টার্ন প্লাস মার্কেটের পূর্ব পাশে)।
ফোন: ৮৩২২৯৮৭
মোবাইল: ০১৭১৪-০১০৮৬৯
 ই-মেইল: blood@quantammethod.org.bd.
ওয়েব সাইট: www.quantammethod.org.bd
 
শাখা
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের শাখা বাংলাদেশের অনেক জায়গাতেই রয়েছে। কিন্তু কোয়ান্টাম ব্লাডের একমাত্র শাখা রয়েছে শান্তিনগর এলাকায়। যেটি ইস্টার্ন প্লাস মার্কেটের পাশেই অবস্থিত।
 
সুবিধা সমূহ
  • এখানে প্রায় সব ধরনের রক্তের গ্রুপ-ই পাওয়া যায়।
  • এখানে প্রক্রিয়াকৃত প্রায় সব ধরনের রক্ত পাওয়া যায়। রক্ত দাতাদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে তা ক্লিনিং করে বিশুদ্ধ করে রক্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রক্ত দিয়ে থাকে।
  • কেবলমাত্র যারা স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়ে থাকে তাদের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে রক্ত গ্রহীতাদেরকে প্রদান করা হয়।
  • স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীতে কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টার তাদের দল বা টিম পাঠিয়ে যথাসম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করে।
  • রক্তদানের পর রক্তদাতার জন্য কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টার জুস এবং গ্লুকোজের ব্যবস্থা করে থাকে।
  • কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টার একটি সম্পূর্ণ সরকার অনুমোদিত রক্তদান কেন্দ্র।
  • রক্ত সংগ্রহে সাধারণত সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। একটি সিরিঞ্জ একাধিকবার ব্যবহার করা হয় না।
  • কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টারের সদস্য হওয়া যায় না। রক্তদানের পর রক্তদাতা এই রক্তদান কেন্দ্রের ডোনার হিসেবে বিবেচিত হবে, যাতে ডোনাররা বিভিন্ন রকম সুবিধা ভোগ করতে পারে।
 
প্রযুক্তিগত দক্ষতা
রক্ত পরীক্ষা, স্ক্যানিং, ম্যাচিং ইত্যাদির জন্য ডিভাইস এবং (Rapid) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
 
রক্তদান প্রক্রিয়া
রক্তদান করতে হলে তাদের ফরম পূরণ করতে হয়। রক্তে যদি কোন প্রকার জীবাণু থাকে তা বিশুদ্ধ করে তারা রক্ত দাতাদের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে থাকে। রক্ত গ্রহণ করতে হলে মেডিকেল অফিসারের সিল ও স্বাক্ষরযুক্ত লিখিত ব্লাড রিকুইজিশন আনতে হবে, তবেই রক্ত গ্রহণ করা যাবে।
 
রক্ত সংরক্ষণ প্রক্রিয়া
রক্ত সংরক্ষণ ও প্রযুক্তি এফডিএ অনুমোদিত উন্নতমানের (সিপিডিএ-১) ব্যাগে স্বযত্নে (৩৭ সে. তাপমাত্রায় এবং ইনডাইরেক্ট কুম্বস টেষ্ট) সংরক্ষণ করা হয়।
 
রক্ত সংগ্রহ প্রক্রিয়া
  • রক্ত সংগ্রহ করার জন্য কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টারে যোগাযোগ করতে হবে। রক্ত সংগ্রহের জন্য কিছুক্ষণ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
  • কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টারে কোন প্রকার অভিযোগ বক্স বা কেন্দ্র নেই।
  • রক্তগ্রহণ করতে হলে কাউন্টারে ৭৫০ টাকা জমা দিয়ে রক্ত গ্রহণ করতে পারবে।
 
বিশেষ সুবিধা
  • সাধারণ মানুষ এবং গরীব-অসহায় রোগীদের জন্য রক্ত সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
  • থেলাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য কোয়ান্টাম সেন্টার বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকে।
 
খোলা-বন্ধের সময়সূচী
  • কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টার সপ্তাহে ৭ দিনই ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে।
 
গাড়ি পার্কিং
  • এখানে নিজস্ব কোন গাড়ি পার্কিং নেই।
পুলিশ ব্লাড ব্যাংক

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ১ লাখ ৩৭ হাজার সদস্যসহ আপামর জনসাধারণের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পুলিশ ব্লাড ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। “রক্তে মোরা বাঁধন গড়ি, রক্ত দেবো জীবন ভরি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর পুলিশ ব্লাড ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়। অপরাধ দমন, তদন্ত ও তথ্য উদঘাটনের মূল কাজের পাশাপাশি রক্ত আদান প্রদানের মাধ্যমে সর্বস্তরের জনগণের সাথে সৌহার্দ্য বৃদ্ধিও এই ব্লাড ব্যাংকের একটি উদ্দেশ্য। পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ ছাড়াও যেকোন ব্যক্তি এই ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নিতে পারেন।
ঠিকানা কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, রাজারবাগ, ঢাকা। ফোন: ৯৩৬২৫৭৩, মোবাইল ফোন: ০১৭১৩-৩৯৮৩৮৬, ই-মেইল: info@policebloodbank.gov.bd, ওয়েব সাইট: www.policebloodbank.gov.bd বর্তমান কার্যক্রম ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাসহ দেশের প্রতিটি জেলায় পুলিশ ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত সরবরাহ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যারা রক্তদানে উৎসাহী তাদের তথ্য নিয়ে একটি ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলছে এখন। এই ব্লাড ব্যাংক থেকে পুলিশসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষকে রক্তদানে উৎসাহিত করার জন্য প্রচারণাও চালানো হয়। এখানে রক্তের যথাযথ সংরক্ষণ এবং সঞ্চালনকে গুরুত্ব দেয়া হয়। গরীব রোগীদের বিনামূল্যে রক্ত দেবার ব্যবস্থাও আছে এখানে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পুলিশ ব্লাড ব্যাংককে ডিজিটাল ব্লাড ব্যাংক হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এখানকার কম্পিউটারাইজড ডাটাবেসে রক্তদাতার রক্তের গ্রুপ এবং যোগাযোগের ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য যুক্ত করা হচ্ছে। দেশব্যাপী একটি কার্যকরী ব্লাড ডোনার পুল গড়ে তোলার চেষ্টা করছে পুলিশ ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পর্যায়ক্রমে সকল বিভাগীয় সদরে স্থায়ী শাখা প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়া কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে ওয়ার্ড, স্কুল ও কলেজভিত্তিক কমিটি গঠন করে রক্ত সংগ্রহের জন্য প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনাও রয়েছে পুলিশ ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। 


রেড ক্রিসেন্ট ব্লাড ব্যাংক সোসাইটি


আর্ত মানবতার সেবায় সদা নিয়োজিত রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি মুমূর্ষু রোগীদের রক্তের প্রয়োজন মেটাতে তৈরি করেছে ব্লাড ব্যাংক। ১৮৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেড ক্রসেরই শাখা রেড ক্রিসেন্ট। মূলতঃ রেড ক্রসই মুসলিম বিশ্বে রেড ক্রিসেন্ট নামে পরিচিত।


কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী চালু করে।
কার্যালয়  ৭/৫, আওরঙ্গজেব রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা – ১২০৭ ফোন: ০২-৮১২১৪৯৭, ০২-৯১১৬৫৬৩। ৬৮৪-৬৮৬ বড় মগবাজার ঢাকা, বাংলাদেশ জাতীয় সদরদপ্তর। ফোন: +880-2-9116563, +880181-1458524 ওয়েব সাইট: www.bdrcs.org
শাখা  রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বাংলাদেশে জেলা শহরে আরও ৫টি শাখা রয়েছে। শাখাগুলো হল ঢাকা, সিলেট, কুমিল্লা, দিনাজপুর ও যশোর।
খোল-বন্ধের সময়সূচী  রেড ক্রিসেন্ট রক্তদান কেন্দ্র সপ্তাহে ৭ দিনই ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। 

 সন্ধানী

সন্ধানী বাংলাদেশের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।


যাত্রা  ১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান আন্দোলনের পথিকৃৎ “সন্ধানী”. বন্ধুর প্রতি ৬ জন উদ্যমী তরুণের অকৃত্রিম ভালবাসা থেকে জন্ম নেয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের এই উজ্জ্বল নক্ষত্রটি। আর্থিক অনটনে জর্জরিত ২য় বর্ষের এক ছাত্রের সকালের নাস্তার টাকা যোগাড় করে দেয়ার মাধ্যমে হঠাৎ করেই সন্ধানীর আত্মপ্রকাশ। আত্মপ্রকাশের পরবর্তী এক বছর বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করলেও ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী’ সন্ধানীর কার্যক্রমের আওতাভুক্ত ছিল না। ১৯৭৮ সালের ২রা নভেম্বর ডিএমসিএইচ ব্লাড ব্যাংকে সন্ধানী প্রথমবারের মত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর’ আয়োজন করে এবং পরবর্তীতে এই দিনটিকেই ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’ হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেয়া হয়।
ইউনিট  ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে সন্ধানীর ১৮টি ইউনিট বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে একযোগে কাজ করছে। সন্ধানী মূলত মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ছাত্রছাত্রী দ্বারা পরিচালিত একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ঐ নির্দিষ্ট ইউনিটের ছাত্রদের নিয়ে গঠিত ২৩ সদস্যের একটি কার্যকরী কমিটির মাধ্যমে আর সবগুলো ইউনিটকে সমন্বয় করার জন্য গঠন করা হয়েছে একটি ‘কেন্দ্রীয় পরিষদ’. সন্ধানীর সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ও সন্ধানী ডোনার ক্লাব সমূহ। প্রতিবছর সন্ধানী গড়ে ৪০,০০০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে। যা দেশের চাহিদা অনুযায়ী অনেক কম হলেও দেশের রক্তের অভাব পূরণে এক দৃঢ় ভূমিকা পালন করছে।
যোগাযোগ: উপরে রক্তের প্রয়োজন হলে ফোন করুন অধ্যায়ে সন্ধানীর যোগাযোগের নাম্বারগুলো দেয়া হয়েছে।

লায়ন্স ব্লাড ব্যাংক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম ও আশপাশের কারও রক্তের প্রয়োজন মেটাতে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করে। এখান থেকে দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে রক্ত দেওয়া হয়। তবে যারা ক্রসমেচিং ও প্রসেসিং খরচ দিতে সক্ষম তাদের কাছ থেকে খরচ নেওয়া হয়। যোগাযোগ : চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশন(সিএলএফ)। জাকির হোসেন রোড, নাসিরাবাদ লায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল, চট্টগ্রাম। ফোন: ০১৫৫৪৩১৬০৯৫। খোলা-বন্ধের সময়সূচী : সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। রক্তদান করার ইচ্ছা থাকলেও তথ্যের অভাবে অনেকে রক্ত দিতে পারেন না। যারা স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে চান তারা যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত ঠিকানায়। এছাড়া ১লা বৈশাখ, একুশে বইমেলা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাসহ বিভিন্ন সময় এসব প্রতিষ্ঠান মাসব্যাপী ব্লাড ক্যাম্পের আয়োজন করে থাকে।


মনে রাখুন:  
* জরুরি রক্তের প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসক/মেডিকেল অফিসার স্বাক্ষরিত রিকুইজিশন পেপার সঙ্গে আনুন।  
* রক্তদাতা হলে ডোনারকার্ড যত্ন করে রাখুন।  
* স্ক্রিনিং ছাড়া রক্ত দেবেন না, রক্ত নেবেন না। এমনকি প্রিয়জনের রক্ত হলেও না।  
* মাদকাশক্ত বা সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে রক্ত নেবেন না। কারণ এ রক্তে থাকতে পারে প্রাণঘাতি ব্যাধি হেপাটাইটিস বি বা সি, এইডসসহ নানান প্রকার সংক্রামক ব্যাধি।  
* প্রতিবার রক্তদানের পরবর্তী কয়েকদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
Blood donor website and mobile phone service in Bangladesh

রবিবার, ১২ জুন, ২০১৬

রক্তদান সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী

রক্তদান সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী

টিউন করেছেন : প্রোগ্রামার রোমেল

রক্তের প্রয়োজন যাদের:
১. দূঘর্টনাজনিত রক্তক্ষরণ -
দূঘর্টনায় আহত রোগীর জন্য দূঘর্টনার ধরণ অনুযায়ী রক্তের প্রয়োজন হয়।
২. দগ্ধতা -
আগুন পুড়া বা এসিডে ঝলসানো রোগীর জন্য পাজমা/রক্তরস প্রয়োজন। এজন্য ৩-৪ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন।
৩. অ্যানিমিয়া -
রক্তে R.B.C. এর পরিমাণ কমে গেলে রক্তে পযার্প্ত পরিমাণ হিমোগোবিনের অভাবে অ্যানিমিয়া রোগ হয়। হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়াতে R.B.C. এর ভাঙ্গন ঘটে ফলে
৪. থ্যালাসেমিয়া -
এক ধরনের হিমোগোবিনের অভাবজনিত বংশগত রোগ। রোগীকে প্রতিমাসে ১-২ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়।
৫. হৃদরোগ -
ভয়াবহ Heart Surgery এবং Bypass Surgery এর জন্য ৬-১০ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন।
৬. হিমোফিলিয়া -
এক ধরনের বংশগত রোগ। রক্তক্ষরণ হয় যা সহজে বন্ধ হয় না, তাই রোগীকে রক্ত জমাট বাধার উপাদান সমৃদ্ধ Platelete দেয়া হয়।
৭. প্রসবকালীন রক্তক্ষরণ -
সাধারণত প্রয়োজন হয় না তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে ১-২ বা ততোধিক ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়।
৮. ব্লাড ক্যান্সার-
রক্তের উপাদানসূমহের অভাবে ক্যান্সার হয়। প্রয়োজন অনুসারে রক্ত দেয়া হয়।
৯. কিডনী ডায়ালাইসিস -
প্রতিবার ডায়ালাইসিস-এ ১ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন।
১০. রক্ত বমি -
এ রোগে ১-২ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়।
১১. ডেঙ্গু জ্বর -
এ রোগে ৪ ব্যাগ রক্ত হতে ১ ব্যাগ Platelete পৃথক করে রোগীর শরীরে দেয়া হয়।
১২. অস্ত্রপচার -
অস্ত্রপচারের ধরণ বুঝে রক্তের চাহিদা বিভিন্ন।
রক্তদানের যোগ্যতা :
সাধারনত একজন সুস্থ ব্যাক্তি চার মাস অন্তর অন্তর রক্তদান করতে পারেন। এবার দেখে নেয়া যাক রক্তদানের যোগ্যতাসমূহ-
বয়স – ১৮-৫৭ বছর।
ওজন - ১০০ পাউন্ড বা ৪৭ কেজির উর্ধ্বে।
তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ( অনুচক্রিকা , রক্তরস ) ওজন ৫৫ কেজি বা তার উর্ধ্বে। রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলে।
রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ৭৫% বা তার উর্ধ্বে থাকলে। সম্প্রতি ( ৬-মাস ) কোন দূঘর্টনা বা বড় ধরনের অপারেশন না হলে।
রক্তবাহিত জটিল রোগ যেমন-ম্যালেরিয়া, সিফিলিস , গনোরিয়া, হেপাটাইটিস , এইডস, চর্মরোগ , হৃদরোগ , ডায়াবেটিস , টাইফয়েড এবং বাতজ্বর না থাকলে।
কোন বিশেষ ধরনের ঔষধ ব্যবহার না করলে।
চার মাসের মধ্যে যিনি কোথাও রক্ত দেননি।
মহিলাদের মধ্যে যারা গর্ভবতী নন এবং যাদের মাসিক চলছে না।
রক্তদান ও রক্ত দানের পর-
রক্তদানের আগে প্রতিটি রক্তদাতাকে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কিছু ব্যক্তিগত ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জিজ্ঞাসা করা হয়। সেগুলোর সঠিক উত্তর দিতে হবে। রক্তদাতার শারীরিক তাপমাত্রা, রক্তচাপ, নাড়ীর গতি পরীক্ষা করা হয় এবং রক্তদাতার রক্ত জীবানুমুক্ত কি না তা জানার জন্য সামান্য রক্ত নেয়া হয়। এছাড়া এই রক্তের মাধ্যমে রোগী রক্তদাতার রক্তের মধ্যে কোন জমাটবদ্ধতা সুষ্টি হয় কি না তাও পরীক্ষা করা হয় (ক্রসম্যাচিং)। রক্ত পরীক্ষার পর কারও রক্তে এইডস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস -সি, সিফিলিস বা অন্য কোন জীবানুর উপস্থিতি ধরা পরলে তাকে (রক্তদাতা) প্রয়োজেনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের পরামর্শ দেয়া হয়।সূঁচের অনুভূতি পাওয়ার মাধ্যমে রক্তদান প্রক্রিয়া শুরু হয়। এতে সময় লাগে সবোর্চ্চ ১০ মিনিট। রক্তদানের পূর্বে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে- যথেষ্ট বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা।রক্তদাতা প্রয়োজন মনে করলে বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারে।রক্তদানের সময় মাথা- শরীর সমান্তরাল থাকতে হবে। দূর হতে রক্ত দিতে এলে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হবে। রক্ত দান করার পরে অবশ্যই নুন্যতম ৫ মিনিট শুয়ে থাকতে হবে। [রক্তের প্রবাহ সমগ্র শরীরে স্বাভাবিক হবার জন্য এটা অতীব জরুরী]। সাধারণত রক্তদান করার পর অতিরিক্ত দামী খাবার গ্রহনের প্রয়োজন নেই। তবে রক্তদানের পর সপ্তাহ খানেক স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি অন্যান্য সময়ের দ্বি-গুণ পানি পান করতে হবে। কেননা একজন রক্তদাতা যেটুকু রক্ত দান করেন [সাধারণত ১ পাউন্ড] তার প্রায় ৬০ ভাগ ঐ সময়ের মধ্যে পূরণ হয়। শুধু লোহিত রক্ত কণিকা পূরণ হতে ১২০ দিন বা ৪ মাস সময় নেয়। রক্তদানের পর অবশ্যই তারিখ মনে রাখতে হবে। [প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই কার্ড সরবরাহ করে]।
বেশিরভাগ রক্ত দাতাই রক্তদানের পর কোন সমস্যা অনুভব করেন না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তদাতা তলপেটে ব্যাথা, দূবর্লতা, মাথা ঘোরা, সূঁচ প্রবেশের স্থানে ক্ষত লালচে দাগ এবং ব্যাথা অনুভব করতে পারেন। সামান্য কিছু ক্ষেত্রে রক্তদাতা জ্ঞান হারাতে পারে বা মাংসপেশীতে খিচুনি ধরতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব সমস্যা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ঠিক হয়ে যায়, কোন ঔষধের প্রয়োজন হয়না।
রক্তদানের সুবিধা:
প্রতি ৪ মাস অন্তর রক্ত দিলে দেহে নতুন BLOOD CELL সৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকগুন বেড়ে যায়।
নিয়মিত রক্তদানে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে বলে হৃদপিন্ড বিশেজ্ঞরা মনে করেন।
স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে আপনি জানতে পারেন আপনার শরীর রক্তবাহিত মারাত্মক রোগ যেমন-হেপাটাইটিস-বি, এইডস, সিফিলিস ইত্যাদির জীবাণু বহন করছে কিনা।
স্বেচ্ছায় রক্তদানে মানসিক প্রশান্তি আসে।
রক্তদানের মাধ্যমে একটি জীবন বাঁচানো পৃথিবীর সবোর্চ্চ সেবার অর্ন্তভুক্ত।
তথ্যসূত্রঃ
বাঁধন
স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন

দুঃসময়ে রক্তদান, সতর্কতা এবং যা জানা জুরুরী

দুঃসময়ে রক্তদান, সতর্কতা এবং যা জানা জুরুরী



প্রাকৃতিক বিপর্যয়, যুদ্ধ, ভূমিকম্প, হরতাল, দুর্ঘটনা নানা ভাবে আহত মানুষ অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মারা যায়। রোগীর অপারেশন করতে গেলে প্রয়োজন পড়ে রক্ত। মানুষের বিপদে মানুষ এগিয়ে আসে রক্ত দেয় বাঁচিয়ে তোলে। সুস্থ মানুষের এই রক্ত দানের ফলে বেঁচে উঠে মৃত্যু পথ যাত্রী মানুষ। রক্ত দানের আগে রক্তদানের নিয়ম এবং সতর্কতাগুলো জেনে নেয়া দরকার।



কারা রক্ত দিতে পারবেন:

• শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ নিরোগ ব্যক্তি রক্ত দিতে পারবেন

• রক্ত দাতার বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে

• শারীরিক ওজন ৪৫ কেজি বা এর বেশি হতে হবে। উচ্চতা অনযায়ী ওজন ঠিক আছে কিনা অর্থ্যাৎ বডি মাস ইনডেক্স ঠিক আছে কিনা দেখে নিতে হবে।

• রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ, পালস এবং শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে হবে
• শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ এ্যাজমা, হাপানি যাদের আছে তারা রক্ত দিতে পারবেন না
• চর্মরোগ থেকে মুক্ত থাকতে হবে

এছাড়া রক্তদানের উপযোগিতা যাচাই করার জন্য কতকগুলো পরীক্ষা করা জুরুরি। যেমন: ১) এনিমিয়া বা রক্ত স্বল্পতা, ২) জন্ডিস, ৩) পালস রেট, ৪) রক্তচাপ, ৫) শরীরের তাপমাত্রা, ৬) ওজন, ৭) হিমোগ্লোবিন টেস্ট, ৮) ব্লাড সুগার বা চিনির মাত্রা পরিমাপ করা ৯) সেরাক ক্রিয়েটিনন, ১০) ইসিজি। পরীক্ষাগুলো খুব সাধারণ। তাই রক্ত দাতাদের আগে থেকে টেস্ট করে রাখা উচিত। বিপদের সময় যাতে বিলম্ব না হয়।
একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ ৪ মাসে অন্তত একবার রক্ত দিতে পারেন। বাংলাদেশে প্রতি ৩ মাসে একবার রক্ত দেয়াকে নিরাপদ ধরা হয়। রক্তদাতা একবার রক্ত দিলে তার শরীরের ১০ ভাগের মাত্র ১ ভাগ রক্ত কমে। কিন্তু এই পরিমাণ রক্ত অল্প সময়েই আগের মত হয়ে যায়। শরীরে সাধারণ ৫-৬ লিটার রক্ত থাকে। রক্তদাতা সাধারণত এক দফায় ৪০০-৪৫০ মিলিলিটার রক্ত দিয়ে থাকেন। এই পরিমাণ রক্ত দেয়াতে দেহের উপর তেমন কোন প্রভাবই পড়ে না। তাই রক্ত দাতার অযথা ভয় ভীতির কোন কারণ নেই। তবে রক্ত দানের আগে এবং পরে বিশেষ কিছু সতর্কতা অবশ্যই পালনীয়।

রক্তদানে বিশেষ সতর্কতা:

• রক্তদানের ৪ ঘন্টা আগে ভালোভাবে খাদ্যগ্রহণ করতে হবে। খালি পেটে রক্ত দান করা ঠিক নয়।

• এসপিরিন ও এ জাতীয় ওষুধ খাওয়া অবস্থায় রক্ত দেয়া যাবে না। রক্তদানের ৪৮ ঘন্টা আগে এমন ওষুধ বন্ধ করতে হবে।

• কোনরূপ এনার্জি ড্রিংক রক্তদানের ২৪ ঘন্টা আগে সেবন করা যাবে না।

• শরীরে কোন উল্কি বা ট্যাটু করানো হলে বা নাক কান ফুটো করানো হলে ২-৪ সপ্তাহ পর রক্ত দিতে হবে।
• অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা অবস্থায় রক্ত দেয়া উচিত না।

বিষয়গুলো জুরুরী তাই রক্তদাতা কে অবশ্যই এগুলো মানতে হবে। একই সাথে রক্ত দেয়ার সময় যে সুঁচ ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিশ্চিত হয়ে নিবেন তা নিরাপদ কিনা। আপনার একটু অসাবধানতায় রক্তে বাসা নিতে পারে কোন মরণব্যাধির। তাই রক্তদান করতেও রাখা উচিত অতিরিক্ত সতর্কতা।

যারা রক্ত দিতে পারবেন না:

• ক্যান্সারের রোগী

• হিমেফিলিয়াতে যারা ভুগছেন

• যারা মাদক গ্রহণ করেছেন

• গর্ভবতী মহিলা
• অতিরিক্ত শ্বাস কষ্ট যাদের আছে
• যাদের এইচআইভি পজেটিভ তথা এইডস আছে
• যাদের ওজন গত ২ মাসে ৪ কেজি কমে গেছে

যারা নিয়মিত রক্তদান করেন তারা একটি কার্ড পান। পরবর্তীতে রক্তদাতার রক্ত প্রয়োজন হলে তিনি যাতে রক্ত পান সেজন্য। এখনকার বিশ্বে রক্তদান কে উৎসাহিত করা হয়। আর আমাদের মতন দেশে বিপদ আপদ দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ৩২ মিলিয়ন মানুষ রক্ত দান করেন। ২০০৪ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ১৪ জুন এ বিশ্ব রক্তদাতা দিবস পালিত হয়। রক্তদান একটি মানবিক কাজ। আপনার দেয়া রক্তে হয়তো একজন মুমূর্ষ রোগী বেঁচে যাবেন। মৃত্যুকে জয় করে এভাবে অসংখ্য মানুষ গাইবে মানবতার জয়গান।

Source: http://dhakatimes.com.bd

রবিবার, ১৫ মে, ২০১৬

শতকরা ৮১ ভাগ ব্লাড ব্যাংকই অবৈধ, নেই আইনের প্রয়োগ

শতকরা ৮১ ভাগ ব্লাড ব্যাংকই অবৈধ, নেই আইনের প্রয়োগ


নিখিল মানখিন ॥ দেশে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। কমেনি পেশাদার রক্তদাতার সংখ্যাও। শতকরা ৮১ ভাগ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র অবৈধ। ব্যক্তিমালিকানাধীন শতকরা ৪৭ ভাগ কেন্দ্রে কোন পরীক্ষা ছাড়াই রক্ত পরিসঞ্চালনের কাজ চলে। দূষিত রক্তে এইচআইভি, ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, হেপাটাইটিস বি ও সি এর মতো মারাত্মক জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। রক্ত দান একটি মহৎ সেবা। রক্তের প্রয়োজনে জীবাণুমুক্ত নিরাপদ রক্তই রোগীকে নতুন জীবন দিতে পারে। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ হেলথ বুলেটিনে দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৪১ বেসরকারী রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের (ব্লাড ব্যাংক) সর্বশেষ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকায় বাইরে থাকা ব্লাড ব্যাংকগুলো অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে। সাধারণ মানুষের উচিত হবে ওই সব অবৈধ ব্লাড ব্যাংক এড়িয়ে চলা। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্লাড ব্যাংকগুলোর মধ্যে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন করা হয় কিনা তাও মনিটর করা হবে। দেশে স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে রেড ক্রিসেন্ট, সন্ধানী, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ও বাঁধনের নাম। প্রতিবছর তারা বিভিন্ন হারে রক্ত সংগ্রহ করে থাকে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের মাধ্যমে। গত ২০০১ সালে এই চার সংগঠনের মাধ্যমে সংগৃহীত রক্তের পরিমাণ ছিল ৭৩ হাজার ৫৬৮ ব্যাগ। ২০০৯ সালে সংগ্রহ করা হয় ১ লাখ ৫২ হাজার ৫৫০ ব্যাগ। ২০০৯ সালে বাঁধন ৪৮ হাজার ২৫৩, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ৪৩ হাজার ৯০১, সন্ধানী ৩৪ হাজার ৭৩৩ এবং রেড ক্রিসেন্ট ২৫ হাজার ৬৬৩ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে। ২০০৮ সালে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ৫৯ হাজার ৫২৬, বাঁধন ৪২ হাজার ৯৬৬, সন্ধানী ৩২ হাজার ৫৬ এবং রেড ক্রিসেন্ট ২৫ হাজার ৬৬৩ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে। গত ২০১১ সালেও এই চারটি সংগঠন দেড় লাখ ব্যাগের বেশি রক্ত সংগ্রহ করে। 
স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রকাশিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সালে দেশের সরকারী ব্লাডব্যাংক ও নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনগুলোতে রক্তদাতাদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগই ছিল পেশাদার। তবে ২০০১ সাল থেকে কার্যক্রম চালু হলে গত ৯ বছরে দাতা সংস্থাগুলোর সহায়তায় সরকারের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০০৯ সালে ওই হার নেমে এসেছে শতকরা ৯ ভাগে। ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১৪৬টি এসবিটি কেন্দ্রের মাধ্যমে পাওয়া ১৮ লাখ ৬৬ হাজার ৪২০ ইউনিট (ব্যাগ) রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৮ হাজার ৫৮২ ইউনিট রক্ত বাতিল বলে গণ্য হয়। বাতিল হওয়া ওই পরিমাণ রক্তের মধ্যে ১০৭ ইউনিটে এইচআইভি, ১ হাজার ৬৩ ইউনিটে ম্যালেরিয়া, ৫ হাজার ৫৯৮ ইউনিটে সিফিলিস, ২ হাজার ১৪৭ ইউনিটে হেপাটাইটিস সি ও সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৫৬৭ ইউনিটে হেপাটাইটিস বি পাওয়া যায়। ওই দূষিত রক্ত কাউকে প্রয়োগ করা হয়নি। গত ২০১১ সালেও পেশাদার রক্তদাতার সন্ধান পাওয়া গেছে। 
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, দেশের শতকরা ৮১ ভাগ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র অনুমোদনহীন। রক্ত সংগ্রহের সময় বাধ্যতামূলক পাঁচটি পরিসঞ্চালন সংক্রমণ পরীক্ষা করা হয় না শতকরা ৫০ ভাগ কেন্দ্রে। রক্ত পরিসঞ্চালন কার্যক্রম তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত লোকদের শতকরা ৭৪ ভাগ নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন না। এ সব কেন্দ্র থেকে সরবরাহকৃত রক্ত গ্রহণে সব সময় ঝুঁকি রয়ে যায়। আশঙ্কা থাকে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আর বেসরকারীভাবে গড়ে ওঠা ব্লাড ব্যাংকগুলোতে রক্ত পরিসঞ্চালন হয় এমন অধিকাংশ রক্তই মাদকসেবীদের বলে জানা গেছে। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৬ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। সংগৃহীত রক্তের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। প্রতিনিয়ত অনাকাক্সিক্ষত সড়ক দুর্ঘটনা, মায়ের প্রসবজনিত জটিলতা, ক্যান্সার, লিউকিমিয়া এবং থ্যালাসিমিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর জীবন রক্ষার্থে রক্তের প্রয়োজন হয়। তবে রক্ত যেমন একদিকে জীবন রক্ষা করে, অন্যদিকে অনিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনে এইডস, হেপাটাইটিস-সি, হেপাটাইটিস-বি, সিফিলিস ও ম্যালেরিয়া ছড়ায়। এ সব জটিল রোগ থেকে নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে পেশাদার রক্তদাতা থেকে রক্ত গ্রহণে বিরত থাকা এবং স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের থেকে রক্ত গ্রহণ করা।